মিড ডে মিল (mid day meal) কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের একটি যৌথ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় সরকারি ও সরকারি অনুদান প্রাপ্ত সমস্ত বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের মধ্যাহ্নভোজ বা মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করা হয়। এই মিড ডে মিলের সাপ্তাহিক মেনু সরকারের তরফে ঠিক করে দেওয়া আছে। যদিও শিক্ষক মহল থেকে বারবার অভিযোগ উঠে আসছে, ছাত্র-ছাত্রীদের মাথাপিছু বরাদ্দ যা, তাতে সরকারের সাপ্তাহিক মেনু মেনে মিড ডে মিল (mid day meal) চালানো প্রায় চ্যালেঞ্জিং কাজ। কিন্তু সেই ব্যাপারে অন্যদিন আলোচনা করা হবে। আজকের প্রতিবেদনের মূল বিষয়, মিড ডে মিলের রিপোর্ট জমা দিতে দেরি করায়, ২০ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এক অদ্ভুত শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার। এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেব আজকের প্রতিবেদনে।
ঘটনাটি ঘটে হরিশচন্দ্রপুর এলাকার ২ নম্বর ব্লকে। এখানে মিড ডে মিলের (mid day meal) রিপোর্ট জমা দিতে দেরি করায় ২০ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে এক অদ্ভুত শাস্তির বিধান দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার। কি ঘটনা ঘটেছিল? কেনই বা এই শাস্তি?
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, গত ৯ ই আগস্ট প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে গোটা রাজ্যে পূর্ণ দিবস সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ওই দিন সরকারি আদেশ বলে বিদ্যালয়ের ছুটি থাকায় মিড ডে মিলের (mid day meal) রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি হরিশচন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের ২০ টি বিদ্যালয়। আর এই কারণেই কোপের মুখে পড়তে হয়, এই ২০ টি বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষককে।
এই ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট ব্লক আধিকারিক এর দপ্তর থেকে একটি নির্দেশিকা বের হয়। নির্দেশিকা স্পষ্ট বলা হয় প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে মোট ২০ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৯ তারিখের মধ্যে মিড ডে মিলের (mid day meal) রিপোর্ট জমা করতে পারেননি। সেই কারণে তাদের বিগত মাসের মিড ডে মিলের বরাদ্দ অর্থ দেওয়া হবে না। পাশাপাশি এই নির্দেশও দেওয়া হয় যে, মিড ডে মিলের অর্থ প্রধান শিক্ষক নিজের বেতন থেকে দেবেন।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট ব্লক আধিকারিক এর কথায়, প্রতিমাসের ১ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে মিড ডে মিল (mid day meal) সেকশনে রিপোর্ট জমা করতে হয়। বারবার জানানোর পরেও ওই ২০ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিড ডে মিলের রিপোর্ট জমা না করায়, এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কারণ, এই জন্য ব্লকের মিড ডে মিল পরিসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে শিক্ষক মহলের দাবি মাসের পর মাস নিজেদের পকেট থেকে মিড ডে মিল (mid day meal) চালানোর পরেও অনেক দেরি করেই সেই বিল মেটানো হয়। অথচ শিক্ষকরা রিপোর্ট দিতে দেরি করায়, তাদের বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশিকা অমানবিক এবং আইন বিরুদ্ধ। তারা মিড ডে মিল স্কিমের কোথায় এই গাইডলাইন লেখা আছে সে সম্পর্কেও আইনি প্রশ্নের উত্তরও চেয়েছেন।
স্কুল শিক্ষা সংক্রান্ত যে কোন আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েব পোর্টালটি অবশ্যই ফলো করুন।