মিড ডে মিল (mid day meal) স্কিমের আওতায় রাজ্যের সরকারি ও সরকারের অনুদান প্রাপ্ত সমস্ত বিদ্যালয়গুলিতে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অর্থাৎ প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষার্থীদের স্কুলেই মধ্যাহ্ন ভোজ বা মিড ডে মিলের (mid day meal) ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকার মিলিতভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করে থাকে। কিন্তু মিড ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ উঠে এসেছে শিক্ষক মহল থেকে। এবার রাজ্যের একটি স্কুলে এই মিড ডে মিলে ছাত্র-ছাত্রীদের পাতে দেওয়া হচ্ছে চিংড়ি মাছ। যা অবাক করেছে শিক্ষক কুলের একাংশকে। আজকে এই বিষয়েই বিস্তারিত জেনে নেব আমাদের প্রতিবেদনে।
মিড ডে মিলে (mid day meal) সরকার থেকে ছাত্রছাত্রীদের মাথাপিছু যে বরাদ্দ করা হয়, তাতে সাপ্তাহিক সরকারি মেনু মেনে ঠিকঠাক মিড ডে মিল পরিচালনায় জীবন ওষ্ঠাগত রাজ্যের একাধিক স্কুলের। একদিকে যেমন মিড ডে মিলের বরাদ্দ কমেছে অন্যদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দ্রব্যমূল্য। রান্নার গ্যাস থেকে আনাজ, সবজি সবকিছুর দাম এই মুহূর্তে বাজারে আগুন। সুতরাং সব মিলিয়ে সরকারি বরাদ্দে মিড ডে মিল চালানো এক প্রকার চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। কিন্তু এরই মধ্যে রাজ্যের একটি স্কুলের অভিনব পদক্ষেপ নজর কেড়েছে শিক্ষা মহলের।
ঘটনাটি রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ থানার কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের। মিড ডে মিলে (mid day meal) বরাদ্দ একদিকে যেমন কম, তেমনই অন্যদিকে আনাজ এর দাম ঊর্ধ্বমুখী। এই বিরূপ পরিস্থিতির সামাল দিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছে আনাজের বাগান। এই বাগানে জৈব সারের মাধ্যমে বিভিন্ন আনাজ ফলানো হচ্ছে। আর সেই আনাজ পড়ছে মিড ডে মিলে ছাত্রদের পাতে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে যে, গত ২ বছর ধরে লঙ্কা আর আলু ছাড়া বাজার থেকে কোনো আনাজ কিনতে হচ্ছে না।
স্কুলটিতে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৪০০ পড়ুয়া আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে যে, সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থে মিড ডে মিল (mid day meal) চালানো মুশকিল হচ্ছিল বাকি স্কুল গুলোর মতই। এই প্রতিকূল পরিস্থিতে স্কুলের ভিতরের জমিতেই আনাজ বাগান করার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই বাগানে এই মুহূর্তে সব ধরনের আনাজ উৎপাদন হচ্ছে। তার মধ্যে পটল, বেগুন, ভেন্ডি, ঝিঙে, ওল, কলমি শাক, শশা, কলা, পেঁপে , লেবু, কুমড়ো , লাউ অন্যতম। এছাড়াও স্কুল এর সামনের জমিতে বিভিন্ন ফলের গাছ আছে। যার মধ্যে সবেদা, জাম, আম, কাঠাল, আমলকী অন্যতম।
এছাড়াও স্কুল লাগোয়া একটি বড় পুকুর ও আছে। যেখানে মাছ চাষ করা হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে ওই মাছ দিয়ে বছরে বেশ কয়েকবার ছাত্রছাত্রীদের মাছ ভাত খাওয়ানো হয় মিড ডে মিলে (mid day meal)। এছাড়াও স্কুলের নামে একটি চাষের জমি আছে যেখান থেকে সামনের রাখি পূর্ণিমার দিন শিক্ষার্থীদের পায়েস খাওয়ানো হবে বলে জানাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কথায় , ২০২২ সাল থেকে আলু ও লঙ্কা ছাড়া কিছুই কিনতে হচ্ছে না। তাই সেই টাকায় কখনো তারা চিংড়ি মাছ কিনে ছাত্র ছাত্রীদের মিড ডে মিলে (mid day meal) খাওয়ান। এই বাগান তারা ভবিষ্যতে চালিয়ে যাবেন। কারণ সরকারি বরাদ্দে মিড ডে মিলে ভালো খাবার দেওয়া অসম্ভব।
স্কুল শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েব পোর্টাল অবশ্যই ফলো করুন।