অত্যধিক গরমের কারণে গত দুই বছরের মতন এই বছরও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই গরমের ছুটি (summer vacation) ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। একেবারে ভোট মিটে যাওয়ার পরে স্কুল খোলার কথা ছিল ৩ রা জুন। কিন্তু পুনরায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে আরও এক সপ্তাহ গরমের ছুটি (summer vacation) বৃদ্ধি করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি শিক্ষা দপ্তর। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ২২ শে এপ্রিল থেকে ৯ ই জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটি (summer vacation) পেয়েছে। আর তারপরে বিদ্যালয়ে স্বাভাবিকভাবে পঠন-পাঠন পুনরায় চালু হয়েছে।
কিন্তু স্কুল খোলার পর থেকেই অত্যাধিক তাপমাত্রা এবং মাত্রাতিরিক্ত আদ্রতার জন্য অসহ্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। একদিকে বৃষ্টির দেখা নেই অন্যদিকে প্রচন্ড তাপপ্রবাহে বেশ কিছু শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীর অসুস্থ হয়ে যাওয়ার খবর আসছিল চারদিক দিয়ে। এরই মধ্যে অভিভাবকদের একাংশ পুনরায় গরমের ছুটি (summer vacation) বাড়ানোর দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু শিক্ষক মহলের একাংশ এই গরমের ছুটি (summer vacation) বাড়ানোর দাবি বিরোধিতা করে মর্নিং শিফটে স্কুল করার কথা বলেন। এর কারণ প্রায় ৫০ দিন ছুটি কাটানোর পর শিক্ষার্থীরা পুনরায় স্কুলের আঙিনায় পা রেখেছেন। কিছুদিন পরেই সেকেন্ড টার্ম পরীক্ষা হবে। তাই সেই ক্ষেত্রে স্কুল পুনরায় বন্ধ করলে সিলেবাস শেষ করা সমস্যা হয়ে যাবে।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তর সেই মতো নতুন করে গরমের ছুটির (summer vacation) জন্য নির্দেশিকা না দিয়ে আগামী ৩০ শে জুন পর্যন্ত সমস্ত ডে স্কুলকে মর্নিং শিফটে করানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই মতো রাজ্যের সমস্ত স্কুলেই এখন আপাতত মর্নিং শিফটে স্কুল হচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে এক অভিনব উদ্যোগ নিতে দেখা গেল সিউড়ি ১ ব্লকের করিধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল হাই স্কুলকে। আর সেই অভিনব উদ্যোগ হল সপ্তাহের ছুটির দিন অর্থাৎ রবিবার দিন বিশেষ ক্লাস নেওয়া।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ মহাশয় জানান টানা ৫০ দিন গরমের ছুটি (summer vacation) থাকার দরুন পড়ুয়াদের পড়াশোনার অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেছে। এদিকে আবার সামনেই দ্বিতীয় টার্মের পরীক্ষা। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে সিলেবাস শেষ করা একপ্রকার মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর ঠিক সেই কারণে সমস্ত শিক্ষক – শিক্ষিকা মিলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি যতটা সম্ভব এই অতিরিক্ত বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে পূরণ করা যায়। তিনি আরো জানাচ্ছেন পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের ভালো আগ্রহ রয়েছে এই বিশেষ ক্লাসে। তাই আগামী দিনেও এই বিশেষ ক্লাস জারি রাখার বিষয়ে তারা পরিকল্পনা করছে।
জানা গিয়েছে যে, প্রত্যেক সপ্তাহে আলাদা আলাদা শ্রেণীর পড়ুয়া নিয়ে এই বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিশেষ ক্লাস সম্পূর্ণভাবে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকের ঐচ্ছিক বিষয়। অর্থাৎ তারা চাইলে ক্লাসে যোগদান করতেও পারেন আবার নাও পারেন। কিন্তু স্কুল সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, প্রথম দিনে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার স্কুল কর্তৃপক্ষকে চমকে দিয়েছে। তাই অতিরিক্ত গরমের ছুটির (summer vacation) কারণে যেটুকু সিলেবাস পিছিয়ে পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা এই অতিরিক্ত বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে সেই সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ।
আপনাদের কি মনে হয়, গরমের ছুটি (summer vacation) অতিরিক্ত হওয়ার কারণে শিক্ষকদের সিলেবাস শেষ করতে সমস্যা হবে? আর এই বিদ্যালয়ের রবিবারের দিন বিশেষ ক্লাসের উদ্যোগের বিষয়ে আপনাদের কি মতামত? কমেন্ট করে অবশ্যই জানান। আর এরকমই শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েব পোর্টালটিকে অবশ্যই ফলো করুন।